অশ্বগন্ধা একটি ঔষধি উদ্ভিদ । অনেক বার হয়ত এর নাম এবং উপকারের কথা শুনে থাকবেন, তবে আমরা আজকে এটিকে একটু ভিন্ন ভাবে উপস্থাপন করব, যে কথাগুলো সচরাচর কেউ বলে না।
অশ্বগন্ধা নাম টি এসেছে অশ্ব বা ঘোড়া এবং গন্ধা বা গন্ধ থেকে। ঘোড়ার নামের সাথে মিল রেখে কেন এর নামকরণ করা হল – মূলত এই নামটি এসেছে অশ্বগন্ধার মূল বা শিকড় থেকে, যা থেকে ঘোড়ার ঘামের গন্ধ পাওয়া যায়। তাই আয়ুর্বেদ গবেষকেরা বিশ্বাস করেন, অশ্বগন্ধা গ্রহণ করলে ঘোড়ার মত শক্তি (শারীরিক শক্তি এবং যৌ-ক্ষমতা) অর্জন করা যায়।
বিস্তারিত কার্যকারিতায় যাওয়র আগে একটা কথা বলা দরকার, আমরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শুধু কার্যকারিতার কথা শুনেই এই ধরনের ঔষধি কিনে থাকি , কিন্তু এগুলোর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন প্রকার এবং কোয়ালিটি (গুনগত মান) । আমরা যদি নিম্ন মানের ঔষধি শুধু মাত্র নাম দেখেই কিনে থাকি তাহলে এর কার্যকারিতা শুধু পুস্তকেই থেকে যাবে
বর্তমান প্রেক্ষাপটে এরকম টাই হচ্ছে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে, কারণ মানুষ অধিক লাভের জন্য নিম্ন মানের টাই বেছে নেয় বিক্রির জন্য। আবার অনেকে ভাল কোয়ালিটি চিনতেও পারে না । ফলে মানুষের মধ্যে এগুলো সম্পর্কে একটা নেতিবাচক ধারণার সৃষ্টি হচ্ছে।
তবে প্রকৃত সত্য এটাই যে সুসাস্থ এবং রোগ মুক্ত থাকতে আল্লাহ্ প্রদত্ত প্রকৃতির বিকল্প নেই।
তাই আমাদের উদ্দেশ্য নিশ্চয়তার সাথে ভাল মানের ভেষজ মানুষের কাছে পৌঁছান। যাতে মানুষ এর প্রকৃত উপকার বুঝতে পারে।
অশ্বগন্ধার কার্যকারিতাঃ
- মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়: অশ্বগন্ধা একটি নামকরা অ্যাডাপ্টোজেন। দেখা গিয়েছে, এটি মানসিক চাপ, অবসাদ এবং দুশ্চিন্তা কমায় এবং মানসিক চাপ সংক্রান্ত সমস্যা যেমন উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়বিটিস প্রতিরোধ করে।
- ডায়বিটিস নিয়ন্ত্রণ করে: গবেষণাপত্রে প্রকাশ পেয়েছে, অশ্বগন্ধা উন্নতমানের ডায়বিটিস প্রতিরোধী (অ্যান্টি-ডায়বিটিস)।এটি স্বাস্থ্যবান এবং ডায়বিটিস আক্রান্তদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: গবেষণায় প্রকাশিত যে অশ্বগন্ধা হচ্ছে অসাধারণ ইমিউনোস্টিমুলেটর (রোগ প্রতিরোধী)। সংক্রমণের বিরুদ্ধে শরীরের রোগ প্রতিরোধী শক্তি বাড়িয়ে তোলে।
- নিদ্রা গাঢ় করে: চাপ এবং দুশ্চিন্তা কমিয়ে অশ্বগন্ধা মাথা ঠান্ডা করতে সাহায্য করে বলে ঘুম খুব ভাল হয়।
- যৌনক্ষমতা বাড়ায়: অশ্বগন্ধা পুরুষ এবং নারীদের যৌনক্ষমতা বৃদ্ধি করে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, মানসিক সমস্যার দরুণ পুরুষদের লিঙ্গ উচ্ছৃত হওয়ার সমস্যা দূর করতে এবং শুক্রাণু বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
- হৃদযন্ত্রের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: অশ্বগন্ধা হৃদয়ের পেশি শক্তিশালী করে হৃদযন্ত্রের সামগ্রিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, যার ফলে রক্ত জমাট হয় না এবং হৃদয় ( হার্ট) এর ওপর চাপ কমে। হৃদরোগের অন্যতম ঝুঁকি কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়।
- সাপের বিষনাশক (অ্যান্টি-ভেনম) হিসাবে কাজ করে : সমীক্ষায় পাওয়া গিয়েছে, সাপের কামড়ের জায়গায় অশ্বগন্ধার প্রলেপ সাপের বিষ প্রশমিত হয় এবং শরীরের অন্যত্র তা ছড়ায় না। স্বাভাবিকভাবে এটি চিরাচরিতভাবে সাপের বিষনাশক হিসাবে প্রচলিত।
- ত্বকের জন্য উপকারী: অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের সমৃদ্ধ উৎস হওয়ার দরুণ অশ্বগন্ধা একটি প্রকৃত বার্ধক্য প্রতিরোধী ভেষজ। বয়ঃবৃদ্ধির প্রাথমিক উপসর্গ রোধ করে এবং শুষ্ক ত্বক এবং কেরাটোসিস-এর বিরুদ্ধে শরীর রক্ষা করে।
- চমৎকার কেশ টনিক: অশ্বগন্ধা চুলে পুষ্টি জোগায়, যা চুল পড়া কমতে সাহায্য করে এবং চুল দীর্ঘ এবং উজ্জ্বল করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হওয়ার কারণে অকালে চুলে পাক ধরা এবং চুল পড়া বন্ধ হয়।
- রজঃস্রাবের উপসর্গ হ্রাস করে: এটি মহিলাদের ঋতুচক্র চলাকালীন সময় চমৎকার কাজ দেয়। এটি চাপ, দুশ্চিন্তা কমায়, হরমোন নির্যাসে সমতা নিয়ে আসে, রজঃস্রাবের উপসর্গ হ্রাস করে।
- পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, অশ্বগন্ধা পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এটি শুধুমাত্র শুক্রাণু সংখ্যা এবং টেস্টোস্টেরোন বৃদ্ধি করে না, এটি যৌনক্ষমতা এবং ক্রিয়ার উন্নতি ঘটায়।
অশ্বগন্ধা পাউডার কিভাবে খেতে হবে ?
হাফ গ্লাস হালকা গরম দুধের সাথে ১ চা-চামুচ পরিমাণ পাউডার মিশিয়ে খেতে হবে । এর সঙ্গে কিছুটা মধু অথবা মিশ্রী মিশিয়েও খেতে পারেন।
Customer reviews
Reviews
There are no reviews yet.
Write a customer review